সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের জীবনে টাকা ব্যবহারের মাধ্যমের ও পরিবর্তন হয়েছে। এখন মানুষ নগদ অর্থ বহন না করে, অন্যান্য মাধ্যমে টাকা বহন করাকে বেশি নিরাপদ মনে করে। এই অন্য মাধ্যমটিই হচ্ছে ই-মানি(E-MONEY)। এই ই-মানি ব্যবহার কে বেশি সংখ্যক মানুষ এখন নিরাপদ মনে করে। কারন নগদ অর্থ হারানো, ছিনতাই, হিসাবে ভুল হওয়ার ভয় থাকলেও, ই-মানির ক্ষেত্রে এরকম ভয় নেই। আর ই-মানি সিস্টেম ব্যবহার করে কাজ করে ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট নেটওয়ার্ক(INTERNATIONAL PAYMENT NETWORK) ভিসা বা ভিসা কার্ড(VISA CARD)। চলুন আজ ভিসা কার্ড সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেইঃ
ভিসা কার্ড কি
মাস্টার কার্ড এর মতই ভিসা কার্ড একটি ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট নেটওয়ার্ক। অর্থাৎ ভিসা কার্ড নেটওয়ার্ক সাপোর্টেড কার্ড গুলো ভিসা ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে। ব্যাংকিং সিস্টেমে ব্যাংক যেসব কার্ড প্রোভাইড করে, তার মধ্যে ভিসা কার্ড অন্যতম। একটি ভিসা কার্ড থাকলে আপনি দেশ-বিদেশের সকল এটিএম বুথে টাকা তোলাসহ, বিভিন্ন মার্চেন্টে পেমেন্ট করার সুবিধা পাবেন। প্রায় সকল এটিএম বুথ, মার্চেন্ট, অনলাইন শপ ভিসা কার্ড সাপোর্ট করে থাকে।
ভিসা কার্ডের সুবিধা
ভিসা কার্ড থাকলে আপনি বিশ্বের সকল এটিএম বুথ ব্যবহার করার সুবিধা পাচ্ছেন। আবার বিভিন্ন অনলাইন শপ থেকে প্রয়োজনীয় কেনাকাটার পেমেন্ট করার সুবিধা, বিভিন্ন মার্চেন্টে পেমেন্ট করার সুবিধা ইত্যাদি পাচ্ছেন, এটাই ভিসা কার্ডের সুবিধা। আর এসব সকল কিছুই করতে পারবেন শুধু একটি ভিসা কার্ড দিয়ে। আপনার বড় অংকের নগদ অর্থ বহন করার প্রয়োজনীয়তা থাকবেনা বললেই চলে।
VISA CARD করতে কি কি লাগে
ভিসা কার্ড করতে কি কি লাগে এটা বিভিন্ন ব্যাংকের ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম। অর্থাৎ ব্যাংক ভেদে ভিসা কার্ডের রিকয়ারমেন্ট(REQUIREMENT) ভিন্ন হয়ে থাকে। তারপরও ভিসা কার্ড করার জন্য সকল ব্যাংকের কিছু কমন(COMMON) জিনিস লাগে।
সেগুলো চলুন দেখে নেইঃ
- ভিসা কার্ড সাপোর্ট করে এমন একটি ব্যাংক একাউন্ট খুলতে হবে । অর্থাৎ আপনি যে একাউন্ট টি করছেন, সেটি ভিসা কার্ড সাপোর্ট করে কিনা সেটা প্রথমেই জেনে নিন। সাপোর্ট করলে সেই একাউন্টটি ওপেন করুন।
- নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র
- নিজের ছবি
- নমিনির জাতীয় পরিচয়পত্র
- নমিনির ছবি
এগুলো থাকলে আপনি ভিসা কার্ড নেওয়ার জন্য প্রস্তুত।
ভিসা কার্ড কিভাবে করতে হয়
ভিসা কার্ড করার নিয়ম খুবি সহজ। VISA CARD করতে কি কি লাগে এটা আমরা ইতিমধ্যে উপরের প্যারাগ্রাফে দেখেছি, এগুলো যদি থাকে আমরা খুব সহজে ভিসা কার্ড করতে পারবো, তাহলে ভিসা কার্ড কিভাবে করতে হয় এটা আর ভাবতে হবে না। চলুন জেনে নেয়া যাক ভিসা কার্ড করার নিয়মঃ
ভিসা কার্ড করতে এর জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট নিয়ে ব্যাংকে গেলে তারা আপনাকে ভিসা কার্ড সাপোর্ট করে এমন একটি একাউন্ট করতে বলবে। এই একাউন্ট করলেই কিছুদিনের মধ্যে ব্যাংকে আপনার জন্য ভিসা কার্ড চলে আসবে। ব্যাংকে ভিসা কার্ড চলে আসলে, আপনি ব্যাংক থেকে আপনার ভিসা কার্ড সংগ্রহ করুন। এটাই আপনার ভিসা কার্ড।
ভিসা কার্ড নাম্বার
ভিসা কার্ড আপনি হাতে পেলে, আপনি যে কার্ড টা পাবেন সেই কার্ডে একটি ১৬ ডিজিট নাম্বার পাবেন, এই নাম্বারটা হচ্ছে ভিসা কার্ড নাম্বার। সাধারনত ভিসা কার্ড নাম্বার সংখ্যা ১৬ ডিজিট হয়ে থাকে।
ভিসা কার্ড করতে কত টাকা লাগে
ভিসা কার্ড করতে কত টাকা লাগে এটা নির্দিষ্ট নয়। বিভিন্ন ব্যাংক এর ক্ষেত্রে ভিসা কার্ড করতে টাকা লাগার পরিমান ভিন্ন । এমনকি কোন কোন ব্যাংক ভিসা কার্ড ফ্রি তে প্রোভাইড করে থাকে। এছাড়া অনলাইনে অনেক কোম্পানি ফ্রি ভার্চুয়াল ভিসা কার্ড দিয়ে থাকে।
ভিসা কার্ড চার্জ
কিছু কিছু ব্যাংক ভিসা কার্ড করতে টাকা না নিলেও ভিসা কার্ড চার্জ হিসেবে বছর ভিত্তিতে ভিসা কার্ড চার্জ নিয়ে থাকে। এটাকে ভিসা কার্ড চার্জ বলা হয়।
ফ্রি ভিসা কার্ড
বিভিন্ন ব্যাংক ফ্রি তে ভিসা কার্ড দিয়ে থাকে। ফ্রি ভিসা কার্ড করতে অনেক ব্যাংক বিভিন্ন সময় অফার ও দেয়। যেমনঃ বর্তমান ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের সেলফিন অ্যাপ -এ একাউন্ট খুললেই ফ্রি তে একটি ভার্চুয়াল ভিসা কার্ড পাওয়া যায়। এটি ফ্রি ভিসা কার্ড এর একটি উদাহরন। আবার ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ এ স্টুডেন্ট (STUDENT) একাউন্ট করলেও ফ্রি ভিসা কার্ড দিয়ে থাকে।
ভার্চুয়াল ভিসা কার্ড
অনেক কোম্পানি ভার্চুয়াল ভিসা কার্ড প্রোভাইড করে থাকে। ভার্চুয়াল ভিসা কার্ড গুলি শুধু পেমেন্টের কাজে ব্যবহার করা যায়, কারন এটা কোন ফিজিক্যাল কার্ড না। শুধু কার্ড এর প্রয়োজনীয় ইনফরমেশন ভার্চুয়াল ভাবে দেখা যায় এবং সেগুলো ব্যবহার করা যায়।
ভিসা কার্ড বাংলাদেশ
যে ভিসা কার্ড গুলো শুধু বাংলাদেশের মধ্যেই সাপোর্ট করবে বা করে, সেগুলো হচ্ছে বাংলাদেশি ভিসা কার্ড কিংবা ভিসা কার্ড বাংলাদেশ। যেকোনো ব্যাংকে এই ধরনের ভিসা কার্ড করা তুলনামুলক সহজ।
আন্তর্জাতিক ভিসা কার্ড
ভিসা কার্ড এ আন্তর্জাতিক লেনদেন করা গেলে সেটাকে বলা হয় আন্তর্জাতিক ভিসা কার্ড। আন্তর্জাতিক ভিসা কার্ড পেতে অবশ্যই আপনাকে আন্তর্জাতিক পাসপোর্টধারী হতে হবে। শুধু পাসপোর্টধারী হলেও হবেনা, পাসপোর্টে মেয়াদ থাকতে হবে।
ভিসা ডেবিট কার্ড কি
ভিসা ডেবিট কার্ড এবং ভিসা ক্রেডিট কার্ড এই দুই ফরম্যাটেই ভিসা কার্ড পাওয়া যায়। ভিসা ডেবিট কার্ড এর ক্ষেত্রে নিয়ম হচ্ছে আপনাকে এই কার্ডে আগে টাকা ডিপোজিট করতে হবে, এবং ডিপোজিট করার পর সেই টাকা আপনি ব্যবহার করতে পারবেন। ডিপোজিট করার পর টাকা ফুরিয়ে গেলে আপনাকে পুনরায় ডিপোজিট করে ব্যবহার করতে হবে, নতুবা ব্যালেন্সে টাকা না থাকলে আপনি কার্ড টি কোন কাজে ব্যবহার করতে পারবেন না।
ইন্টারন্যাশনাল ভিসা ডেবিট কার্ড
ভিসা ডেবিট কার্ড কে যদি আন্তর্জাতিক অর্থাৎ ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন কাজে ব্যবহার করার সুবিধা থাকে, তাকে ইন্টারন্যাশনাল ভিসা ডেবিট কার্ড বলা হয়। বাংলাদেশের অধিকাংশ ইন্টারন্যাশনাল ভিসা কার্ড গুলোই ডেবিট কার্ড।
ভিসা কার্ড থেকে বিকাশে টাকা আনার নিয়ম
ডেবিট কার্ড থেকে বিকাশে টাকা আনার নিয়ম আমরা অনেকেই জানিনা। বিকাশের অ্যাড মানি অপশন ব্যবহার করে আপনি ভিসা কার্ড থেকে বিকাশে টাকা আনতে পারবেন। এই জন্য অবশ্যই আপনার বাংলাদেশি ভিসা কার্ড লাগবে। একই সাথে বিকাশে এই সুবিধা ব্যবহার করতে আপনার ফোনে বিকাশ অ্যাপ থেকে অ্যাড মানি অপশন ব্যবহার করতে হবে।
ভিসা কার্ড থেকে নগদ টাকা আনার নিয়ম
ভিসা কার্ড থেকে অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং এর মত নগদ এও টাকা আনা যায়। ভিসা কার্ড থেকে নগদ টাকা আনার নিয়ম অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকির এর মতই। এই জন্য আপনার নগদ অ্যাপস টি লাগবে। নগদ অ্যাপস এর অ্যাড মানি অপশন থেকে কার্ড থেকে অ্যাড মানি এই অপশন ব্যাবহার করলে ভিসা কার্ড এর ডিটেইল চাইবে। তখন আপনার কার্ড এর ডিটেইল এবং কত টাকা আনতে চাচ্ছেন পরিমান দিলেই কার্ড থেকে নগদ অ্যাকাউন্টে টাকা চলে আসবে।
ভিসা কার্ড থেকে মোবাইল রিচার্জ
এখন প্রায় সব মোবাইল কোম্পানি অনলাইন রিচার্জ সুবিধা দিয়ে থাকে। আর এই অনলাইন রিচার্জ করার সময় পেমেন্টের জন্য ভিসা কার্ড সুবিধা দেওয়া থাকে। তাই চাইলেই ভিসা কার্ড থেকে মোবাইল রিচার্জ খুব সহজেই করা যায়। কিছু কিছু মোবাইল কোম্পানির অনলাইন রিচার্জ এর জন্য ওয়েবসাইট থেকে রিচার্জ করার সুবিধা, আবার কিছু কিছু মোবাইল কোম্পানির অনলাইন রিচার্জ এর জন্য তাদের নিজস্ব অ্যাপস রয়েছে। মজার ব্যাপার অনলাইন রিচার্জ এর জন্য তারা অনেক সময় অনেক অফার দিয়ে থাকে।
ভিসা কার্ড এবং মাস্টার কার্ডের পার্থক্য নিয়ে এই ভিডিও টি দেখতে পারেন –
পরিশেষে বলা যায়, ভিসা কার্ড ডিজিটাল যুগের সাথে মিল রেখে ট্রানজেকশন কাজে এক গুরুত্বপূর্ণ কার্ড। তাই সম্ভব এবং প্রয়োজনীয়তা সাপেক্ষে আমরা একটা ভিসা কার্ড করে নিতে পারি।
আমি ফ্রি ভিসা কার্ড চাই অনুগ্রহ করে দিবেন
আপনি সেলফিন একাউন্ট খুলে ফ্রি ভিসা কার্ড নিতে পারবেন।
Hallo vai
আমি ফ্রি ভিসা র্কাড নিতে চাই আমাকে
দিতে পারবেন
আপনি সেলফিন একাউন্ট খুলে ফ্রি ভিসা কার্ড নিতে পারবেন।
mdharunmdharun535@gmail.com
Pingback: এটিএম কার্ড সম্পর্কে যে বিষয় গুলো অজানা - বিডি কিক
আমার একটা ভিসা কার্ড লাগবে
Try to follow the post, and apply with choosen method