Skip to content
Home » কোন ভিটামিনের অভাবে মুখে ঘা হয় (২০২৩ – মেডিক্যাল প্রুফ)

কোন ভিটামিনের অভাবে মুখে ঘা হয় (২০২৩ – মেডিক্যাল প্রুফ)

কোন ভিটামিনের অভাবে মুখে ঘা হয়

মুখে ঘা হলেই আমাদের নিজেদের, অথবা পরিচিত কারোর কখনো মুখে ঘা(MOUTH ULCER) হলেই আমরা অনেক দুশ্চিন্তায় পরে যাই। অনেকেই ভয় পেয়ে যাই, ভাবি হয়তো বড় কোন সমস্যা হল। কিন্তু প্রাথমিক অবস্থায় আমাদের ভয় পাওয়া উচিত না। সাধারণত মুখে ঘা হওয়ার কারন হচ্ছে ভিটামিনের অভাব। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কোন ভিটামিনের অভাবে মুখে ঘা হয় । 

কোন ভিটামিনের অভাবে মুখে ঘা হয়

কোন ভিটামিনের অভাবে মুখে ঘা হয়

মুখের ঘা হওয়ার জন্য অনেক কারন থাকতে পারে, তবে প্রাথমিক ভাবে মুখের ঘা এর কারন ভিটামিন বি১২ এর অভাব। অর্থাৎ ভিটামিন বি১২ (VITAMIN B12) এর অভাবে মুখে ঘা হয় বা হতে পারে। আবার ভিটামিন বি২(VITAMIN B2) কিংবা আমরা যেটাকে রিবোফ্লাভিন নামে চিনি, এর অভাবেও মুখে ঘা দেখা দেয়।এছাড়া শরীরে আয়রন(IRON), ফলিক এসিড(FOLIC ACID), জিংক(ZINC) এর অভাবের কারনেও মুখে ঘা দেখা দিতে পারে।

কোন ভিটামিনের অভাবে মুখে ঘা হয় – ডা. মো. সাইফুল আজম রনজুর ইন্টারভিউ

শুধু কি ভিটামিনের অভাবেই মুখে ঘা হয় ?

শুধু কি ভিটামিনের অভাবেই মুখে ঘা হয় ?

শুধু  যে কোন না কোন ভিটামিনের অভাবে মুখে ঘা হয় এই কথা মোটেও সত্য না। মুখে ঘা হওয়ার পেছনে ভিটামিনের অভাব ছাড়া আরো অনেক কারন থাকতে পারে। 

চলুন জেনে নেই কি কি কারনে মুখের ঘা হতে পারে –

মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ (STRESS AND ANXIETY)

অতিরিক্ত মানসিক চাপে থাকলে কিংবা অতিরিক্ত উদ্বিগ্ন, দুশ্চিন্তায় মুখের ঘা বার বার হতে পারে। তাই নিজের মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কে কন্ট্রোল এ রাখতে হবে। দরকার হলে একজন মানসিক ডাক্তারের ট্রিটমেন্ট নিতে হবে।

ঘুমের অভাব (LACK OF SLEEP)

মুখের ঘা কেন হয়

অতিরিক্ত মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কিংবা অতিরিক্ত কাজের চাপের কারনে যদি আপনার ঘুমের অভাব হয়, এর কারনেও বার বার মুখে ঘা হতে পারে। একই সাথে রাত্রে জেগে থাকা উচিত না। সঠিক সময় ঘুমানো এবং সঠিক সময় ঘুম থেকে উঠা উচিত।

হরমোনের পরিবর্তন (HORMONAL CHANGES)

হরমোনের পরিবর্তন , কিংবা হরমোনের যে ব্যালেন্স থাকা উচিত, তা যদি সঠিক ভাবে না থাকে, এই কারনেও মুখে ঘা দেখা দিতে পারে। 

সোডিয়াম লরিল সালফেট ধারণকারী টুথপেস্ট (SODIUM LAURYL SULPHATE)

অধিকাংশ টুথপেস্টে সোডিয়াম লরিল সালফেট থাকে। আর মুখের ঘা হওয়ার জন্য এই সোডিয়াম লরিল সালফেট একটি ট্রিগার হিসেবে কাজ করে। তাই বাজার থেকে সোডিয়াম লরিল সালফেট বিহীন টুথপেস্টে খুজে, সেগুলো ব্যবহার করতে হবে।

অ্যাসিডিক খাবার (ACIDIC FOODS)

অধিক বা ঘন ঘন অ্যাসিডিক খাবার খাওয়ার কারনে মুখে ঘা হতে পারে। তাই খুব বেশি পরিমান কিংবা ঘন ঘন অ্যাসিডিক খাবার খাওয়ার অভ্যাস থাকলে সেটা কমিয়ে ফেলতে হবে। সবচেয়ে বেশি অ্যাসিডিক খাবার গুলোর মধ্যে লেবু, চুন, বরই, আঙ্গুর, জাম্বুরা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

ছত্রাক সংক্রমণ (FUNGAL INFECTION)

নিয়মিত ব্রাশ না করা, কিংবা মুখ অপরিস্কার রাখা অর্থাৎ ওরাল হাইজিন (ORAL HYGIENE) ঠিকঠাক না রাখলে মুখে ছত্রাক সংক্রমণ (FUNGAL INFECTION) দেখা দিতে পারে। আর এই ছত্রাক সংক্রমণ (FUNGAL INFECTION) এর কারনে মুখে ঘা হতে পারে। তাই নিয়মিত ২ বার (সকালে খাবার পর এবং রাত্রে খাওয়ার পর) ব্রাশ করার অভ্যাস করতে হবে। এবং মাঝে মাঝে লবন মিশিয়ে গরম জল কুলকুচি করতে হবে। জিহবা পরিষ্কার রাখতে হবে। ৩ থেকে ৪ মাস পরপর ব্রাশ পরিবর্তন করতে হবে। কারন বেশিদিন ব্রাশ ব্যবহার করলে, ব্রাশ এ ছত্রাক দেখা দিতে পারে।

ধূমপান ত্যাগ (QUITTING SMOKING)

ধূমপান কিংবা তামাক জাতীয় যেকোনো নেশা আমাদের জন্য খারাপ, কিন্তু অনেকের-ই এই তামাকে কিংবা ধুমপানের নেশা দীর্ঘদিনের। হটাত করে এই নেশা ত্যাগ করার কারনেও মুখে ঘা দেখা দিতে পারে। তাই এসব ত্যাগ করার সময় ডাক্তার সহযোগিতা এবং পরামর্শ নিতে পারেন।

মুখে দাঁতের কামড় (BITING INSIDE MOUTH)

আমাদের অনেক সময় কথা বলতে গিয়ে কিংবা কিছু খেতে গিয়ে মুখের না অংশে কিংবা জিহ্বায় কামড় লাগে। এটা হটাত করেই হয়। কিন্তু এই কামড়ের কারনে ক্ষত সৃষ্টি হয়ে মুখে বা জিহ্বায় ঘা হতে পারে। আপনার যদি মাঝে মাঝেই এরকম কামড় লেগে অসুবিধা হয়, তাহলে আপনার উচিত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া। ডাক্তার প্রয়োজন মনে করলে আপনার দাঁতে ডিভাইস বা মাউথ গার্ড দিয়ে এই কামড় লাগার সমস্যা থেকে আপনাকে মুক্তি দিতে পারে।

মাড়ি আঘাতগ্রস্ত (INJURED MOUTH)

শক্ত খাবার খাওয়া কিংবা অসতর্কভাবে ব্রাশ করলে মুখে, জিহ্বায় কিংবা দাঁতের মাড়িতে আঘাত লাগতে পারে। আর এই আঘাত থেকেও মুখে ঘা দেখা দিতে পারে। তাই খুব শক্ত খাবার গুলো সাবধানতার সাথে খেতে হবে, কিংবা এড়িয়ে চলতে হবে। একই সাথে ব্রাশ ব্যবহার এর ক্ষেত্রেও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। শক্ত ব্রাশ ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে, নরম এবং সফট ব্রাশ ব্যাবহার করতে হবে।

এলার্জি প্রতিক্রিয়া (ALLERGIC REACTION)

এলার্জি প্রতিক্রিয়া কারনে মুখে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হতে পারে, যার কারনে মুখে ঘা হতে পারে। আপনার এলার্জি থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

মুখের ভিতরে ইনফেকশন (MOUTH INFECTION)

মুখের ভিতরে ইনফেকশন থেকেও আপনার মুখে ঘা দেখা দিতে পারে। তাই মুখে কোন প্রকার ইনফেকশন দেখা দিলে যতো দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

পানিশূন্যতা (DEHYDRATION)

পর্যাপ্ত পানি পান না করার কারনে পানিশূন্যতা দেখা দিলেও, মুখে ঘা হতে পারে। অর্থাৎ পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান করতে হবে। 

মুখের ভিতর ঘা হলে কি করনীয়

মুখের ভিতর ঘা হলে কি করনীয় (প্রাথমিকভাবে)

মুখের ঘা হলে আমাদের কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। আমরা যদি ঘা হওয়ার পর ও সাবধানতা অবলম্বন না করি, তা হলে মুখের ঘা বেশি কিংবা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। চলুন জেনে নেই মুখের ভিতর ঘা হলে কি করনীয়ঃ

  • মুখ পরিষ্কার রাখতে হবে, প্রয়োজনে গরম জলে লবণ মিশিয়ে কুলকুলি করতে হবে।
  • শক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
  • কিছুদিন অ্যাসিডিক খাবার যেমনঃ লেবু, চুন, বরই, আঙ্গুর, জাম্বুরা এড়িয়ে চলতে হবে।
  • মানসিক চাপ এবং দুশ্চিন্তা এড়িয়ে চলতে হবে।
  • ঠিকমত ঘুমাতে হবে।
  • পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার বিশেষ করে ভিটামিন বি১২ (VITAMIN B12), ভিটামিন বি২(VITAMIN B2), আয়রন(IRON), ফলিক এসিড(FOLIC ACID), জিংক(ZINC) পাওয়া যায় এমন খাবার গুলো বেশি করে খেতে হবে।
  • চকলেট, জুস, কোক, চুইংগাম এসব খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

মুখের ঘা এর চিকিৎসা

মুখের ঘা অসহনীয় কিংবা দীর্ঘদিন মুখে ঘা থাকলে এর থেকে খারাপ কিছু হতে পারে। তাই মুখের ঘা এর চিকিৎসা করার জন্য ভাল ডাক্তার এর পরামর্শ নিতে হবে। মুখের ঘা এর চিকিৎসার জন্য মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ দেখানো যেতে পারে। অনেকে চর্ম বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখানোর পরামর্শ ও দিয়ে থাকে।

মুখে ঘা হলে কি ঔষধ

মুখে ঘা হলে কি ঔষধ খাবো কিংবা ডাক্তার কোন ঔষধ লিখে এইটা অনেকেরই মনে প্রশ্ন। কিন্তু ইন্টারনেটে সার্চ করে, সেখান থেকে ঔষধ এর নাম নিয়ে, সরাসরি ঔষধ এইভাবে খাওয়া উচিত না। কারন সবার জন্য সব ঔষধ যেমন কাজ করে না, তেমন ঔষধের পাশ্বপ্রতিক্রিয়ার কারনে শরীরে অন্য অসুবিধা ও দেখা দিতে পারে। তাই মুখে ঘা হলে ডাক্তার দেখিয়ে তার পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করতে হবে। মুখের ঘা সাধারণত ডাক্তার প্রয়োজনীয় ভিটামিন যেমনঃ ভিটামিন বি১২ (VITAMIN B12), ভিটামিন বি২(VITAMIN B2), আয়রন(IRON), ফলিক এসিড(FOLIC ACID), জিংক(ZINC সাপ্লিমেন্ট দিয়ে থাকে। আবার ডাক্তার মুখের ঘা এর এন্টিবায়োটিক ও দিতে পারে। আবার ডাক্তার মুখে ঘা এর মলম দিয়ে থাকে।

মুখের ঘা এর এন্টিবায়োটিক

ডাক্তার মুখের ঘা দেখে প্রয়োজনে ঘা এর জন্য এন্টিবায়োটিক দিতে পারে। তবে চিকিৎসক এর পরামর্শ ব্যতীত কখনই মুখের ঘা এর এন্টিবায়োটিক কিংবা অন্য কোন এন্টিবায়োটিক খাওয়া উচিত না। 

মুখে ঘা এর মলম

মুখে ঘা এর জন্য নানা রকম মলম রয়েছে। এর মধ্যে স্টেরয়েড মলম অন্যতম। ডাক্তার এর পরামর্শ অনুযায়ী ঘা এ মলম ব্যবহার করলে তুলনামুলক বেশি উপকার পাওয়া যায়, এবং ব্যাথা দ্রুত উপশম হয়।

মুখের ঘা এর হোমিও ঔষধ

অন্যান্য জটিল রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে হোমিও ঔষধ যেমন রয়েছে, তেমন মুখের ঘা এর হোমিও ঔষধ ও আছে। সঠিক হোমিও ডাক্তার দ্বারা চিকিৎসা করালে মুখে ঘা হোমিও ঔষধ দ্বারা ভাল হওয়া সম্ভব।

পরিশেষে বলা যায়, কোন ভিটামিনের অভাবে মুখে ঘা হয় কিংবা মুখের ভিতর ঘা হলে কি করনীয় এই উত্তর গুলো আপনি পেয়ে গেছেন। আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে প্রশ্নটি করুন, আমরা সাধ্যমত আপনার প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবো।

Spread the love
Tags:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *